লিখেছেন:জি,এম-আদল
মাত্র ২৩ বছর বয়সে কীভাবে একজন সফল উদ্যোক্তা হলেন জানতে চাইলে স্বাধীন বলেন, ‘খুব ছোট থেকেই নতুন কিছু করার প্রবল আগ্রহ ছিল। যার প্রতিফলন আজকের এই 'স্বাধীন কম্পিউটার ট্রনিং সেন্টার এ্যান্ড টেলিকম’। কিন্তু কালক্রমে সেটি যে আমাকে একজন সফল উদ্যোক্তা করে তুলবে তা কখনো ভাবতেই পারিনি।’
ব্যাবসার শুরুর গল্প বলতে গিয়ে এই তরুন উদ্যোক্তা জানান, নিজের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি। আর উৎসাহ দিয়েছেন তার বড় ভাই।২০১৮ সাল থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে ‘স্বাধীন কম্পিউটার এ্যান্ড টেলিকম'।
তরুন এই উদ্যোক্তা আরো বলেন,
"প্রথমে পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ ইংরেজি ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হইছিলাম।পরে সাফা কলেজ দিয়া ডিগ্রি করছি।কারন ভেবে দেখলাম যে ইংরেজীতে অনার্স শেষ করতে ৪ বছর লাগবে,তারপর খরচ ও বেশি, গ্রাম থেকে পিরোজপুর সদরে যাওয়া-আসা,থাকার খরচ, ফ্যামিলি থেকে অতোটা পারবে না।
ভাবলাম বসে থেকেও লাভ নাই,আর আমার কাজ জানা আছে, হাতের কাজটাকে কাজে লাগাই।অযথা আড্ডা দিয়ে কি লাভ,আর গ্রামের মানুষ ও কম্পিটার বা অনলাইন সম্পর্কে খুব বেশি জানে না,আর যারা জানে তারা দূরে কাজ করতে যায়,২টাকার ফটোকপি করতে তাদের নিম্ন ৩০টাকা খরচা হয়।আর চাকরির জন্য নিম্নে ১০টা পরীক্ষা দিছি চাকরি হয় নায়,আর কোম্পানীর চাকরি তো চাকরি!তাই নিজে কিছু করি,পাশাপাশি পড়াশুনাও ঠিক থাকবে ,কারো কাছে হাত পাততে হবে না।।
প্রথমে আমি একটা কম্পিউটার দিয়ে ট্রেনিং ও দোকানের কাজ শুরু করি,আর সাথে ছিল একটা প্রিন্টার।এখন আমার ৪ টা কম্পিউটার হয়েছে।
বড় ভাইয়ের কাছ থেকে ৫০,০০০ টাকা পুজি নিয়ে তার সাপোর্টেই ব্যবসা শুরু আমার।মা প্রথম বলছিল যে, এ দিয়ে কি হবে তার চেয়ে চাকরি বাকরি কর।কিন্তু আমি ভাবছি যে চাকরি করলে পড়া লেখা হবে না, কারন টাইম মত ছুটি পাবো না।পরে মাও আর নিষেধ করেনায়।"
স্বধীনের প্রতিষ্ঠানটি মাত্র কয়েক বছরে অর্জন করেছে অবিস্মরণীয় সাফল্য। হয়ে উঠেছে জানখালী বাজারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।
তিনি বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানে সময় দেয়া অনেক সময় কঠিন হয়ে পরে।মাত্র ৫০,০০০ টাকা পুঁজি নিয়ে যাত্রা শুরু করেন স্বাধীন । শুরুতে ঝুঁকি নিলেও, পরবর্তীতে এসেছে সফলতা। ব্যবসা করতে গেলে ঝুঁকি থাকবেই। তাই বলে পিছপা হননি ২৩ বছরের এই তরুন।
স্বাধীন বলেন, "ধৈর্য্য এবং সততার সাথে সব সময় কাজ করেছি। প্রতিদানস্বরুপ আমার প্রতিষ্ঠান সফল হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে সফল হয়েছি আমি।"
ভবিষ্যতে কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তরুন এই উদ্যোক্তা জানান, তার প্রতিষ্ঠানটিকে আইটি ফার্মে রুপান্তর করার ইচ্ছাও আছে। এটি করতে পারলে বেকারত্ব নিরসনেও ভূমিকা রাখবে। এছাড়া সবসময় চালু রাখবেন তরুণদের জন্য কম্পিউটার ট্রেনিং কোর্স।নতুন উদ্যোক্তা বা যারা নতুন পরিসরে ব্যবসা করতে চান তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ধৈর্য্য, সততা, নিষ্ঠা, এবং অধ্যাবসায়ের সাথে কাজে লেগে থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার তুষখালী ইউনিয়নের জানখালীর তোফেল আকন স্কুলের নিকটে অবস্থিত 'স্বাধীন কম্পিউটার ট্রনিং সেন্টার ও টেলিকম’। এখানে লাইব্রেরি,কম্পিউটার টাইপ, ছবি প্রিন্ট, ফটোকপি,কম্পিউটার প্রশিক্ষণ,মোবাইল রিচার্জ,বিকাশ,নগদ,রকেটে টাকা আদান প্রদান সার্ভিস সহ আরো নানা সেবা চালু রয়েছে।
অনেক অনেক শুভ কামনা করছি।
ReplyDeleteধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার পিরোজপুর ডট কম কে।