লিখেছেন :আশিক মাহমুদ রিয়াদ
আমার শৈশব কেটেছে নদী বেষ্টিত ইন্দুরকানী উপজেলায়। আমি সত্যি ভাগ্যবান ছিলাম এমন একটা যায়গায় আমার শৈশব কাটিয়েছিলাম বলে। আমাদের বাসার সামনে ছিলো অনেক বড় একটা মাঠ। বলতে গেলে বাসা থেকে বাইরে পা রাখলেই মাঠের সবুজ ঘাস। আমার বেশির ভাগ সময় কাটতো মাঠে খেলে কিংবা নদীতে ঝাপাঝাপি করে।বাসায় এ নিয়ে নালিশও যেত,আমি বেশিক্ষণ নদীতে ডুবাডুবি করতাম বলে। আব্বুর সাথে আমাকে রাস্তাঘাটে দেখলেই গুরুজনেরা এ নালিশ দিতেন তার কাছে৷ আব্বু অবশ্য আমাকে তেমন কিছুই বলতেন না। আর যখন বলতেন তখন যেরকম বলার কথা তেমনই বলতেন।
নদীর পাড়ে গিয়ে দাড়াতেই নির্মল বাতাস, আর আর চোখ বাড়াতেই চোখে পড়ে কচা আর বলেশ্বরের মোহনা। বলেশ্বর কখনো কখনো খরস্রোতা হয়ে উঠতো। আবার কখনো কখনো বয়ে চলত শান্ত হয়ে। একবার পাড়িও দিয়েছিলাম এপাড় থেকে ওপাড়ে। তখন ভাটা ছিলো বলে তেমন পানি ছিলো না। তাও নদীটা নেহাত কম বড় নয়।
বিকেল বেলা মাঠে ক্রিকেট আবার কখনো কখনো বোম্ববাস্টিং। আবার কখনো কখনো লুকোচুরিও খেলা হতো৷ বর্ষাকাল এলে মাঠের কাঁদাপেড়িতে ফুটবল, কেউ মেসি, কেউ রোনালদো কিংবা নেইমার। তারপর ফুটবল নিয়ে নদীতে ঝাপ দিতাম। ছোটবেলায় যে নদীর পোঁকা ছিলাম।
২০১৪ ফুটবল বিশ্বকাপের সময়টা ছিলো রোজার মাস। আর্জেন্টিনার ফ্যান ছিলাম বলে বাসার পাশে স্কুলের বিল্ডিংয়ে টাঙ্গিয়ে ছিলাম বড় একটা আর্জেন্টিনার পতাকা। যেদিন খেলা থাকতো সেদিন হাজির হয়ে যেতাম সাদিক ভাইয়ের রুমে। হইহুল্লোরে মেতে উঠতাম। এইতো সেদিন!
ব্রাজিল সমার্থকদের সাথে দারুন বাকযুদ্ধ বেজে যেত আমাদের। আমরা আর ওরা সংখ্যায় প্রায় সমান সমানই ছিলাম। কখনো কখনো মাঠে খেলা হতো দুই গ্রুপের মধ্যে। খেলায় হারলে কিংবা জিতলে এ দল ও দলকে নিয়ে ঠাট্টা করতাম।
সময়ের ব্যবধানে অনেক কিছুই ফেলে আসতে হয় অতীতে। তবে আমার শৈশব যেখানে ছিলো সেখানে ভবিষ্যৎ নামের কোন অপশন ছিলো না। হঠাৎ করেই যেন বড় হয়ে গেলাম। ডানপিটে থেকে হলাম বাউন্ডুলে!
খেয়াঘাট |
ইন্দুরকানী মেহেউদ্দিন মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় |
ইন্দুরকানী ব্রীজ |
এই যে দূরে নদীর মোহনা। কচা আর বলশ্বেরের মিলনস্থল |
এই যায়গার মাম আগে ছিল ফেরিঘাট।তখন হলুদ রঙা একটা ফেরি চলাচল করত |
নবনির্মিত স্কুলের বিল্ডিং। ঐ যে টিন শেড একটা বিল্ডিং দেখা যাচ্ছে বাপাশে ওখানে থাকতাম আমরা।ছোটবেলা থেকেই টিনের চালে বৃষ্টির আওয়াজ শুনতে শুনতে বড় হয়েছি এবং এই আওয়াজ এত মধুর!এত স্নিগ্ধ! |
খেলার মাঠ |
Comments
Post a Comment