লিখেছেন :জি,এম-আদল
নেতৃত্বের ক্ষেত্রে বয়স যে কোনও বাধা নয় তা শুভকে দেখলেই বোঝা যায়। মাত্র ২৩ বছর বয়সে শুভ একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড।
এই তরুনের পূর্ণ নাম ফাহাদ বিন হুসনে আলী । বন্ধু এবং পরিবারে তাকে শুভ বলেই ডাকে। বাংলা নববর্ষের শুভ দিনে তার জন্ম হওয়ায় মা বাবা তার নাম রেখেছিল শুভ।
বাবার চাকরি সুত্রে জন্ম ভোলায়। ক্লাস ফোর পর্যন্ত পড়ালেখা মাদারীপুরে। মাধ্যমিকে পড়াশুনা করেছে মঠবাড়িয়ায়, পরবর্তীতে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং করেছে খুলনায়।
ছেলেটি প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশুনার ঘোর বিরোধী। তার মতে গোটা দুনিয়ার লেখাপড়া ব্যাবস্থা হল শিক্ষার্থীর স্মৃতিশক্তি পরীক্ষা করা যেখানে ব্যাবস্থাটা হওয়া উচিত ছিল কে কতটুকু বুদ্ধিমান সেই আঙ্গিকে।তাই
ব্যাকডেটেড এডুেকশন মেথডকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বর্তমানে সে অনলাইনেই পড়াশুনা করছে ব্লকচেইন ও ডাটা ম্যানেঞ্জমেনট নিয়ে ।
বর্তমানে শুভ নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক কো-ওয়ারকিং কোম্পানি seats2meet এর বাংলাদেশ এর কান্ট্রি হেড।seats2meet এর কাজ হল সারা বিশ্বের ছোট ছোট উদ্যক্তাদের জন্য মিনি অফিস, মিটিং স্পেস করে দেয়া। এর বাইরেও হসপিটালিটি ভিত্তিক লোকেশনগুলোকে সফটওয়্যার সলিউশন দিয়ে থাকে কোম্পানিটি। এরই মধ্যে ২৯টির বেশি দেশে কোম্পানিটি কাজ করছে।
এত পেশা থাকতে এই পেশাকে বাছাইয়ের কারন জানতে চাইলে শুভ জানান, "এই পেশায় আসার এক মাত্র কারন হল আমি অফিস সংস্কৃতির বেড়াজালে থাকতে নারাজ। কম্পিউটার ভালবাসি, ভালবাসি একটু স্বাধীন থাকতে। এমনও অনেক হয় যে ৪ ঘন্টার একটা ফ্লাইটে বসে আমি ১ দিনের কাজ শেষ করে ফেলেছি। ফ্লেক্সিবিলিটি ইজ এভ্রিথিং।”
তরুণদের জন্য কিছু করতে চায় সে। শুভযাত্রা নামে তার একটি ওয়বসাইট রয়েছে। ওখানে সে তার ভ্রমণ গল্প লেখে। তার মতে সবার একটা ভ্রান্ত ধারনা ভ্রমণ শুধু ধনীরা করতে পারে। কথাটি মোটেও সত্য না। ভ্রমণ করতে লাগে ডেডিকশন। সেই ডেডিকেশন যোগাতেই শুভযাত্রার যাত্রা শুরু করেছেন ফাহাদ বিন হুসনে আলী (শুভ)।তার কোম্পানির হয়ে বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করতে যেমন তার গর্ব লাগে তেমনি ভ্রমণকারী হওয়া ছিল তার ছেলেবেলার স্বপ্ন। তাই যেদিন অনেক টাকা হবে সেদিন সব ছেড়ে শুধু দুনিয়া ঘুরার স্বপ্ন দেখে এই তরুন। সে স্বপ্ন দেখে একদিন তার চোখে দুনিয়া দেখার স্বপ্ন দেখবে হাজার তরুণ।
এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৬টি দেশ ঘুরেছে শুভ। ভারত, নেপাল, ভুটান, ইন্দোনেশিয়া, কম্বডিয়া, ভিয়েতনাম। শুভ ভ্রমণের ক্ষেত্রে কখনই দেশ হিসাব করেনা সে। কতগুলো শহর দেখলো আর কত মানুষের সাথে মিশলো সেটাই শুভর কাছে মুখ্য। এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে শুভ বলে ”কেউ যদি ঢাকা এসে বলে আমি বাংলাদেশ দেখেছি, আপনার কেমন লাগবে? বাংলাদেশি বেশিরভাগ ভ্রমণকারীর অবস্থা ঠিক এইরকম। প্রোফাইলে নানান দেশের পতাকা নয় বরং যে দেশে গেলেন সেই দেশের সংস্কৃতির সাথে কতটুকু মিশলেন সেটা নিজেকে প্রশ্ন করুন। ভ্রমণ হোক নিজের জন্য। ”শুভর চোখে এখন গোটা দুনিয়া দেখার স্বপ্ন।
ফাহাদ বিন হুসনে আলী (শুভ) স্বপ্ন দেখে একদিন তার ইনিশিয়েটিভ থেকে গ্রাম বাংলার হাজার তরুণ প্রযুক্তি বিষয়ে শিখবে। তারাও দুনিয়ার বুকে নিজেকে, নিজের স্বপ্নকে মেলে ধরবে। এই ব্রিটিশ আমলের শিক্ষা ব্যাবস্থাটার পরিবর্তন হবে, ভাল শিক্ষা সব কিছু পরিবর্তন করে দেবে।শহরের চেয়ে গ্রামকেই ভালবাসে শুভ।তিনি মনে করেন প্রযুক্তির এই যুগে গ্রামে বসেও বিশ্ব জয় করা সম্ভব।
Comments
Post a Comment