এলব্যাম থেকে তারই একটি কে এম লতিফ ইনিস্টিউটের ম্যাগাজিন থেকে ১৯৬৭ইং। শহীদ গোলাম মোস্তাফা ২ সারির বামে প্রথমে বসা। আজ মনে পড়ে ১৯৬৯ইং জানুয়ারির শেষে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় শেখ মুজিবুর রহমান কারার অন্তরালে (রাস্ট্র বনাম শেখ মুজিব) মামলা বাতিল সহ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১১দফা দাবি নিয়ে রাজপথে, আন্দোলন সংগ্রামে সারা পূর্ব পাকিস্তান উত্তাল। মঠবাড়ীয়ায়ও আন্দলোন সংগ্রামের কমতি নেই, ঢাকার সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিটি কর্মসূচিতে। কে এম লতিফ ইনিস্টিউটের ছাত্ররা আন্দলোন সংগ্রামের অগ্রভাগে, আমরা ছুটে চলেছি মঠবাড়ীয়ার প্রতিটি বিদ্যালয়ে গঠন করেছি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, বিদ্যালয় শাখা। আমরাও রাস্তায় ঢাকার সাথে তাল মিলিয়ে জেলের তালা ভাংবো শেখ মুজিবকে আনবো,তোমার দেশ আমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ, পিন্ডি না ঢাকা ঢাকা, তোমার আমার ঠিকানা পদ্দা মেঘনা যমুনা স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত মঠবাড়ীয়ার হাট বাজার। এমনি একটা দিনে ধর্ম ঘটের ডাক দিল কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এবং আমরাও ব্যাপক প্রস্তুতি নিলাম কিন্তু বাদ সাধলো উভয়(খান সাহেব হাতেম আলী জমাদ্দার গ্রপ ও নব্য জব্বার ইন্জিনিয়ারিংএর ক্রপ) মুসলিম লীগের নেতৃবৃন্দ, বৈঠক করলেন যৌথ ভাবে পাওনিয়ার ব্যাংকে। যে করেই হোক কে এম লতিফ ইনিস্টিউটে ছাত্র ধর্মঘট হতে দিবেন না,শিক্ষকরাও একমত। মুসলিম লীগের প্রস্তুতি জানাতে পেরে, আমরাও লোক চক্ষুর অন্তরালে রাত ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে তিনও ছাত্র হোস্টেলের ছাত্রদের বের করে নিলাম, এ জেনো হোস্টেল ধর্মঘট। মূলত তা নয়, সকালে কোন ছাত্রকে যেন শিক্ষকেরা ডেকে ক্লাসে না নিতে পারে সে জন্য। হোস্টেলের ছাত্রদের বারোআানী কাচারি বাড়ি ও একটি অংশ কলেজের সামনে আশ্রমে নিয়ে নিলাম,এর ৬ মাস পরে কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং প্রতিটি রাস্তায়ই বাজারের বাইরে গ্রপ করে খুব ভোর থেকেই ছাত্র নিয়োগ করলাম। গুলিশাখালী নিরব ও বাদলের নেতৃত্বে এবং গুদিঘাটা থেকে দিলিপ পালইকের নেতৃত্বে মিছিল আসার সাথে সাথে, আমাদের হোস্টেলের দুই জায়গায় অবস্থান রত ছাত্ররা সহ বিভিন্ন রাস্তায় সমবেত ছাত্ররা মিছিল সহকারে মঠবাড়ীয়া বাজারে প্রবেশ করে ভিক্ষোবে ফেটে পরে। তিন দিক থেকে মিছিল চলছে, মুসলিম লীগের বয়স্ক গুন্ডারা মন্দিরের ব্রিজ থেকে এসে ইউসুফ ফরাজির দোকানের সামনে মিছিলের অগ্রভাগে থাকা শহীদ গোলাম মোস্তাফার উপর অতর্কিতে হামলা চালায়,দূর দন্ত সাহসী গোলাম মোস্তাফা হামলাকারী বয়স্ক মুসলিম লীগের নেতাকে ইটের আথাতে রক্তাক্ত ও পরাভূত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় ঐ নেতা আমার নাম উল্লেখ করে বলতেছে এমাদুল আমাকে মেরেছ,অথচ আমি তখন বর্তমান তরকারি বাজারের ওখান থেকে হোটেলের রান্নার জন্য সুন্দরী চলা সবার হাতে দিচ্ছি। এর মূল কারন নেতৃত্ব দানকারী বা কে এম লতিফ ইনিস্টিউটের আমি তখন জি এস। মুসলিম লীগের বয়স্ক গুন্ডার একটি অংশ অবরুদ্ধ হয়ে যায় ইউনিয়ন পরিষদের ওখানে।
শহীদ গোলাম মোস্তাফার হামলাকারী রক্তাক্ত হওয়ার চরম খেচারত দিতে হয়েছে গোলাম মোস্তাফাকে। ৫ই মে ১৯৭১ ইং গ্রেপ্তার হলেও ৮ তাং পরযন্ত থানায় রেখে,সেই নির্মম পাষনড নির্যাতন করে পিরোজপুর চালান দেয় এবং ১০ মে রাতে চান মারী খেয়াঘাট বর্তমান ফেরিঘাটে অন্য ৯ জন সহযোদ্ধা সহ হত্যা করা হয়।
লিখেছেন :
এমাদুল হক খান
বীর মুক্তিযোদ্ধা
Comments
Post a Comment