১২ বছর আগেও জেলায় মাত্র একটি মাল্টার বাগান ছিল। এখন এ ফল বাগানের সংখ্যা হাজারেরও বেশি। বর্তমানে এ জেলায় ১২২ হেক্টর জমিতে মাল্টার বাগান গড়ে উঠেছে যা একরের হিসেবে ৩০৫ একর। এ বছর এসব বাগানে লেবু জাতীয় এ ফলটি এই জেলায় এত বেশি ফলেছে যে ফলের দোকান ছাপিয়ে বাজারের সবজি বিক্রেতার ঝুড়ি ও রিকশাভ্যানেও স্থান পেয়ে বাড়িতে বাড়িতে ঘুরে ঘুরে ফেরিওয়ালা হাঁক দিয়ে বিক্রি করছেন ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। ফলের দোকানে কেজি প্রতি দাম ১১০ থেকে ১২০ টাকা। এ জেলায় ২০০৭ সালে সূচিত প্রকল্পের মাধ্যমে পিরোজপুর পেয়েছে নতুন পরিচিতি, আর মাল্টা জেলার খ্যাতি, ‘সুইট অরেঞ্জ’ মাল্টা হয়ে গেল এ জেলার ব্রান্ডিং। ক্রেতারা ফলের দোকানির কাছে আমদানিকৃত হলুদ মাল্টার চেয়ে পিরোজপুরের সবুজ মাল্টার বেশি বেশি খোঁজ নেন। বিদেশি অন্য ফলের চেয়ে সস্তা বলে ক্রেতারা এ ফলটির প্রতি ঝুঁকছেন। ক্রেতারা এরই মধ্যে জেনে গেছেন ফলগুলো বাগান থেকে সদ্য তুলে আনা হয়েছে, পচন ঠেকাতে ফরমালিন বিষের স্পর্শ লাগেনি। তাই নিরাপদ ফল জেনেই খাদ্য-সচেতন ভোক্তারা দোকানে গিয়ে ফলটি খোঁজেন।
পিরোজপুরের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আবু হেনা মোহাম্মদ জাফর জানান, পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে এ জেলায় মাল্টা চাষকে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় করা সম্ভব হয়েছে মাত্র দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে। গত দুই বছরে জেলার ৬৭ হেক্টর জমির মাল্টা চাষ দ্বিগুণ হয়ে ১২২ হেক্টরে পৌঁছেছে। জেলার নাজিরপুর, নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি), ভাণ্ডারিয়া ও মঠবাড়িয়া উপজেলায় সাইট্রাস ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট এবং গোপালগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প নামে দুইটি নতুন প্রকল্পের অধীনে এ অঞ্চলে মাল্টা চাষ সম্প্রসারণে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নতুন নতুন উদ্যোগ নিচ্ছে।
পিরোজপুরের বিশিষ্ট কৃষি লেখক জগত্ প্রিয় দাস বিশু জানান, মাল্টায় প্রচুর পুষ্টিমান ও ঔষধি গুণ থাকায় ভোক্তাদের এ ফলটির প্রতি আকর্ষণ বেশ। আগে ফলের দোকানে গিয়ে অন্যান্য ফলের সঙ্গে মানুষ বিদেশি মাল্টা খুঁজতেন। এখন পিরোজপুর জেলায় উত্পাদিত স্থানীয় মাল্টা খুঁজে নেন স্বল্পদামে। মাল্টা ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ খাওয়া প্রয়োজন। মাল্টার প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী অংশে বিদ্যমান পুষ্টিমানের মধ্যে ভিটামিন ‘সি’ ৪৫ থেকে ৬১ মিলিগ্রাম। এছাড়া পানি, আমিষ, চর্বি, শর্করা, আঁশ, ছাই, ভিটামিন ‘এ’, সাইট্রিক এসিড, খাদ্যশক্তির পরিমাণও সন্তোষজনক মাত্রায় বিদ্যমান। ফল ক্রেতা আতিকুর রহমান হিরু বলেন, স্থানীয়ভাবে উত্পাদিত হওয়ায় বাজারে এর সরবরাহ পর্যাপ্ত।
সুত্র: দৈনিক ইত্তেফাক
২৯ আগস্ট, ২০১৯
https://www.ittefaq.com.bd/print-edition/country/83573/%E0%A6%AA%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%9C%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%95-%E0%A6%AB%E0%A6%B2%E0%A6%A8
Comments
Post a Comment